, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


শেখ হাসিনা পালিয়ে না গেলেই ভালো হতো: জামায়াতের আমির 

  • আপলোড সময় : ০৬-০৯-২০২৪ ১২:৩৭:০৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৯-২০২৪ ১২:৩৭:০৮ অপরাহ্ন
শেখ হাসিনা পালিয়ে না গেলেই ভালো হতো: জামায়াতের আমির 
এবার ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে না গেলেই ভালো হতো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার উচিত দেশে ফিরে বিচারের মুখোমুখি হওয়া। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জামায়াতের আমির এই মন্তব্য করেন।

এতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, পাকিস্তানের সঙ্গে তারা কেমন সম্পর্ক চান, এসব বিষয়সহ নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শফিকুর রহমান বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) ভারতে পালিয়ে না গেলেই ভালো হতো। আমি প্রত্যর্পণ শব্দটি ব্যবহার করতে চাই না, তবে আমরা বিশ্বাস করি, তার ফিরে আসা উচিত এবং বাংলাদেশে আইনের মুখোমুখি হওয়া উচিত।’

দেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দেওয়া উচিত, তবে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য হওয়া উচিত নয়। আমরা যথাসময়ে নতুন নির্বাচন নিয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করব। তবে যখনই নির্বাচন হবে, আমরা অংশগ্রহণ করব। ’ তার দল ভারতের সঙ্গে ভালো এবং স্থিতিশীল সম্পর্ক চায় জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, তবে নয়াদিল্লিকে প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে পররাষ্ট্রনীতির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে হবে। কারণ কোনো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে সমর্থন করে। তবে দল এটিও বিশ্বাস করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং চীনের মতো দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের শক্তিশালী ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা উচিত।’  জামায়াতে ইসলামীকে ভারতবিরোধী ভাবা নয়াদিল্লির ভুল ধারণা মন্তব্য করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয়। আমরা বাংলাদেশপন্থী এবং আমরা একমাত্র বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় আগ্রহী।’ 

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের বাংলাদেশের নির্বাচনের সময় একজন সিনিয়র ভারতীয় কূটনীতিক ঢাকা সফর করে নির্বাচনে কার অংশগ্রহণ করা উচিত এবং কার উচিত নয় তা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এটি অগ্রহণযোগ্য ছিল, কারণ এটি একটি প্রতিবেশী দেশের ভূমিকা নয়।  ‘আমরা বিশ্বাস করি ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে তার পররাষ্ট্রনীতির পুনর্মূল্যায়ন করবে। আমরা মনে করি একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এড়ানো উচিত।’

জামায়াতের আমির বলেন, এক সঙ্গে কাজ করা এবং হস্তক্ষেপ করা দুটি ভিন্ন জিনিস। এক সঙ্গে কাজ করার একটি ইতিবাচক অর্থ আছে, যেখানে হস্তক্ষেপ ব্যাপারটি নেতিবাচক। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অর্থ সহযোগিতা এবং পারস্পরিক সম্মান হওয়া উচিত। ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী; আমরা স্থল এবং সমুদ্র উভয় সীমানা ভাগ করি, তাই আমাদের ভালো সম্পর্ক থাকা উচিত। আপনি আপনার প্রতিবেশীর থেকে দূরে থাকতে পারবেন না।

শফিকুর রহমান জানান, অতীতে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ ছিল। তবে গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে এই যোগাযোগ কমে যায়। ভারতের সাথে কার্যকর সম্পর্ক এখন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশে জামায়াত কর্মীদের দ্বারা হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগের বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, এই অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক চাই। আমরা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মিয়ানমার, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কাসহ উপমহাদেশের আমাদের সব প্রতিবেশীর সাথে সমান ও ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক চাই। স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য এই ভারসাম্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যার জন্য ভারতকে অভিযুক্ত করেছেন কেউ কেউ। এ বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা বলছি না যে, ভারী বৃষ্টিপাতের জন্য ভারত দায়ী। তবে ভারতের উচিত ছিল পানি ছাড়ার আগে আমাদের জানানো, যাতে আমরা পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারি এবং জীবন বাঁচাতে পারি।’ 
সর্বশেষ সংবাদ